পুজকরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নকল ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে শিক্ষক নিয়োগ চেষ্টা

প্রকাশিত: ১২:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২১

পুজকরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নকল ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে শিক্ষক নিয়োগ চেষ্টা

মাঈন উদ্দিন দুলাল- নাঙ্গলকোটের পুজকরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ রেজুলেশনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবক সদস্যদের স্বাক্ষর নকল করে এবং স্থানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে পরীক্ষার দিন ধার্য্য করে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে নিয়োগ বোর্ড।
জানা যায়, উপজেলার পুজকরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী বেগম ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ও সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারী অবসর গ্রহণ করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে শূণ্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে স্কুল সভাপতি মনগড়া মতে প্রধান শিক্ষক পদে অফেরৎ যোগ্য ৩ হাজার ও সহকারী প্রধান পদে ২৫০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট সহ আবেদন করতে বলা হয়। যার ফলে আবেদনের কোরাম পূণ্য হয়নি। পরে দ্বিতীয় বার একটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয় কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার কথা থাকলেও বহুল প্রচার হয়ে যাবে ভয়ে সভাপতি দেয়নি। দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার আবেদন করায় তার স্থলে ওই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ১৮ জুন দু’ পদে প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য্য করা হয়। পরে নিয়োগ পক্রিয়ায় ত্রুটি পাওয়ায় পরীক্ষার দিন ডিজির প্রতিনিধি জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা আক্তার পরীক্ষা স্থগিত করেন। নিয়োগের আশ্বাসে পুজকরা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী পাশ্ববর্তী এক স্কুল এন্ড কলেজের দু’ শিক্ষক থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়েছে বলেও নাম প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিধি মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, আমরা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে সকল রেজুলেশনে স্বাক্ষর দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা থাকলেও সভাপতি নতুন একটি রেজুলেশন খাতায় নিজেই সবার স্বাক্ষর নকল করে কুমিল্লা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেন ও ডিজির প্রতিনিধি এনে নিয়োগ প্রার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেন। আমরা ডিজির প্রতিনিধিকে জাল জালিয়াতির ঘটনাটি জানানোর পর তিনি তাৎক্ষনিক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে চলে যান।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য কমিটির যে রেজুলেশন জমা করা হয়েছে এতে আমার স্বাক্ষরসহ কমিটির কয়েকজন সদস্যের স্বাক্ষর নকল করে জমা দেন সভাপতি। এমনকি সময় সল্পতার অজুহাত দিয়ে স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি তিনি স্কুল শিক্ষকদের উপস্থিতিতে স¦ীকার করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অভিযুক্ত শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, স্বাক্ষর নকলের বিষয়টি সম্পূর্ণ সত্য নয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সবগুলো পত্রিকা আনতে না পারার কারনে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্থগিত করা হয়েছে। কুমিল্লার ৪-৫টি দৈনিক পত্রিকায় আমি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি কিন্তু এখনো পত্রিকা সংগ্রহ করতে পারিনি। নিয়োগের আশ্বাসে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগটি মিথ্যা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা নিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধিরা নির্ধারিত তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার জন্য একত্রিত হই, কিন্তু দু’টি প্রত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা থাকলেও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা দেখাতে না পারায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

 

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ