নাঙ্গলকোটে কোটি টাকার ‘গায়েবি মামলায়’ দিশেহারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

প্রকাশিত: ১:২৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২২

নাঙ্গলকোটে কোটি টাকার ‘গায়েবি মামলায়’ দিশেহারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

নিজস্ব প্রতিনিধি- নাঙ্গলকোটের বাঙ্গড্ডা গ্রামের হারুনুর রশিদ নামে এক আদম ব্যাপারীর গায়েবী মামলায় পাশ্ববর্তী চারিজানিয়া গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভ‚ক্তভোগীরা হলেন চারিজানিয়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গফুর মজুমদারের সৌদিআরব প্রবাসী ছেলে আবুল হাশেম, হাশেমের ভাই আবুল কাশেম গাফুরী, শ^শুর আবু তাহের ও স্ত্রী মিলন আক্তার। আদম ব্যাপারী হারুনুর রশিদ বাঙ্গড্ডা গ্রামের উত্তর পাড়ার হেদায়েত উল্লার ছেলে।

ভুক্তভোগী প্রবাসী আবুল হাশেম এর ভাই আবুল কাশেম গাফুরী বলেন, আমার ভাই দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে সৌদি আরবে হাউজ ড্রাইভার হিসাবে কর্মরত। গত কয়েক বছর আগে সৌদি আরবে একই শহরে থাকার সুবাদে আমার ভাইয়ের সাথে সর্ম্পক গড়ে উঠে হারুনের। এক পর্যায়ে আমার দুই ভাগিনাকে ভিসা দেবে বলে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নেয় হারুন। এরপর তিনি ভিসা না দিলে আমার ভাই টাকা ফেরত চান, কিন্তু ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে হারুন। এনিয়ে আমার ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর সৌদি আরবে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকেই আদম ব্যাপারী হারুনুর রশিদ আমার পরিবারকে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। হারুন ২০১৯ সালে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয় আমার ভাই ও আমার বিরুদ্ধে। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন আমার ভাইয়ের কাছে তিনি ৬৬ লাখ টাকা টাকা পাবেন। পরে সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এরপর ২০২০ সালে থানায় আরেকটি মামলা করলে সেটিও মিথ্যা প্রমাণিত হয়। সর্বশেষ গত ১৭ জানুয়ারি কুমিল্লার আদালতে আমাদের চারজনকে আসামি করে আরেকটি গায়েবি মামলা দায়ের করেন হারুন। সেখানে উল্লেখ করা হয় ২০১৭ সালের বিভিন্ন সময়ে আমার ভাই ঢাকার ফেইথ এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সি কার্যালয়ে বসে তাঁর ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মামলায় আমার ভাই হাশেমকে নিজের ম্যানেজার বলে উল্লেখ করে হারুন। অথচ মামলায় উল্লেখিত সময়গুলোতে আমার ভাই সৌদিআরবে ছিলেন। আমার ভাই ২৮ বছর ধরে সৌদিতে গাড়ি চালায়, তিনি বাংলাদেশে হারুনের ম্যানেজার হয় কীভাবে? আমরা প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রতারক হারুনের শাস্তি দাবী জানাই।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হারুনুর রশিদ বলেন, আমি মামলা করেছি সত্য-মিথ্যা আদালতেই প্রমাণ হবে। তাঁরা এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি হাশেমের কাছে টাকা পাবো, এনিয়ে অনেক সালিশ বৈঠকও হয়েছে। আমি আমার টাকা ফেরত চাই। আমার বিরুদ্ধে তাঁদের এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

ফেইথ এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সির মালিক জামাল হোসেন বলেন, আমাদের কার্যালয়ে হারুনের সঙ্গে হাশেমের কোন লেনদেন হয়নি। যদি তিনি মামলায় এমন কথা লিখে থাকেন, তাহলে সেটি মিথ্যা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাঙ্গলকোট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন খন্দকার বলেন, মামলাটি তদন্ত চলমান, আদালতে সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশে নাকি সৌদি আরব ছিলেন, সেই বিষয়টিও আমরা তদন্ত করে দেখছি।

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ