আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ নিতে স্বামী পরিত্যক্তা খুরশিদাকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২১

আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ নিতে স্বামী পরিত্যক্তা খুরশিদাকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

ছয় মাস আগে আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ নিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেতিয়ারা গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ৫৫ বছর বয়সী হোসনেয়ারা বেগম প্রকাশ খুরশিদার মুখমন্ডলে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে আপন ছোট বোনের জামাই আবুল হোসেন। মামলার একমাত্র আসামী আবুল হোসেনকে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ সাতক্ষীরার পলাশপুর থেকে গ্রেফতার শেষে কুমিল্লার ম্যাজিষ্ট্রেট গোলাম মাহবুবের আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এ স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। মঙ্গলবার দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মনির হোসেন।
তিনি জানান, গত ৪ মার্চ দক্ষিণ বেতিয়ারা গ্রাম থেকে স্বামী পরিত্যক্তা হোসনেয়ারা বেগম প্রকাশ খুরশিদার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন হোসনেয়ারার বাড়ির পাশ^বর্তী বাস চালক জাফর আহমেদ বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত আবুল হোসেনকে একমাত্র আসামী করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর থেকে আবুল হোসেন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে আবুল হোসেনকে ১৩ মার্চ রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার শেষে আবুল হোসেন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়-সে একাই খুরশিদাকে হত্যা করেছে। কেন হত্যা করা হয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল হোসেন জানায়, নিহত খুরশিদা অনেকটা মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। হত্যার ৬ মাস আগে খুরশিদা তুচ্ছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবুল হোসেনকে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে। এক পর্যায়ে তার বাম হাতের ‘অনামিকা’ আঙুল ভেঙে ফেলে। বিষয়টি তিনি মনের মধ্যে ক্ষোভ হিসেবে জমা করে রাখেন। পরবর্তীতে হত্যার আগের দিন ৩ মার্চ সন্ধ্যায় খুরশিদা আরও একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবুল হোসেনের বাসায় গিয়ে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে চলে যায়। ছয় মাস আগে আঙুল ভাঙার প্রতিশোধ এবং হত্যার আগের দিন গালমন্দের বিষয়টি আবুল হোসেন কোনমতে মেনে নিতে না পারেনি। ্ ক্ষোভে আবুল হোসেন ৪ মার্চ ভোর রাত আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় কৌশলে খুরশিদা ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় খুরশিদার ঘরের ভিতরে রাখা ২৪ ইঞ্চি শক্ত কাঠ দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় খুরশিদার মুখমন্ডলে স্বজোরে আঘাত করলে নাক ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। পরে আবুল হোসেন ঘর থেকে বের হয়ে মসজিদে গিয়ে ফজর নামাজ পড়ে পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। দিনের বেলায় তিনি জানতে পারেন-খুরশিদার রক্তাক্ত লাশ থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এ সংবাদ পেয়ে আবুল হোসেন তাঁর এক বন্ধুর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপুর গিয়ে আত্মগোপন করে থাকে।

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ