পুলিশের গুলি, টিয়ার সেল নিক্ষেপ নাঙ্গলকোটে আ’লীগ বিএনপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, ৫০শিক্ষার্থী সহ আহত শতাধিক

প্রকাশিত: ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২২

পুলিশের গুলি, টিয়ার সেল নিক্ষেপ নাঙ্গলকোটে আ’লীগ বিএনপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, ৫০শিক্ষার্থী সহ আহত শতাধিক

মাঈন উদ্দিন দুলাল- বিদ্যুত, জ্বালানী ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও পুলিশের গুলিতে ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বুধবার সকালে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয়। অপর দিকে একই সময়ে বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সমাবেশ ডাকে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে নাঙ্গলকোট বাজার আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারসেল ও গুলি ছুড়ে।

উভয় পক্ষের সংঘর্ঘে ও পুলিশেরে টিয়ারসেল এবং রাবার বুলেটের আঘাতে ৫০শিক্ষার্থী ও পুলিশ’সহ উভয় পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। সংঘর্ষের সময় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়, লোটাস চত্ত্বর, পুলিশের পিকআপ, নাঙ্গলকোট এ্যাপোলো হাসপাতাল, কয়েকটি মোটর সাইকেল ও বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জনা যায়, নাঙ্গলকোট এ.আর মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলা বিএনপি সভাপতি নজির আহম্মেদ ভূঁইয়া ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতৃত্বে হাজার-হাজার নেতাকর্মী সকাল থেকে উপজেলা সদরে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে প্রথমে নাঙ্গলকোট পশ্চিম বাজারে পুলিশ বাধা দেয়, এসময় বাধা ভেঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল বাজারে প্রবেশ করে। একই সময় উপজেলা বিএনপি আহবায়ক নজির আহম্মেদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল এসে একসাথে হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান-প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পূর্ব থেকে লোটাস চত্ত্বরে অবস্থান নেয়া উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন নয়নের নেতৃত্বে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত হাজার-হাজার নেতাকর্মীদের সাথে একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

একই সময় আওয়ামীলীগের সমাবেশ উপলক্ষ্যে আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা রেল স্টেশন এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাজারে আসলে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা সাইদ ইকবাল, বাবলু, নজির আহম্মেদ সুমন, ফারুক হোসেন’সহ অর্ধশত নেতাকর্মী ও আওয়ামীলীগের ৪ নেতাকর্মী আহত হয়। এসময় পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেলের কাঁদানে গ্যাসে শ্রেণী কক্ষে থাকা নাঙ্গলকোট এ.আর মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি সভাপতি নজির আহম্মেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশ হামলা চালায়। হামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৫০ নেতাকর্মী আহত ও ৫ নেতাকে অন্যায় ভাবে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।
উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ সাদেক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, নাঙ্গলকোটবাসীকে আমরা বড় ধরনের একটি অঘটনের হাত থেকে রক্ষা করতে বাজারে অবস্থাননি। গফুর ভূঁইয়া সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে আমাদের ৩-৪ জন নেতাকর্মীকে আহত করে।
সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, আমাদের মিছিলের শেষ পর্যায়ে আ’লীগ অতর্কিত হামলা চালায়, হামলায় আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেনের মোবাইল ফোনে বারবার ফোন দিয়ে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ