সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়ার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

প্রকাশিত: ১:৩৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২১

সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়ার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

মাঈন উদ্দিন দুলাল-
দু’বারের সাবেক সংসদ সদস্য গণ মানুষের নেতা আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়ার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মরহুমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের বদরপুরে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন। কর্মসূচির মধ্যে ছিল মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জেয়ারত, কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রওশন আরা আবেদীন সিগ্ধা ও সদস্য সচিব ঢালুয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাছান ভূঁইয়া বাছির।
দোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি রফিকুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ, নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামছু উদ্দিন কালু, উপজেলা আ’লীগ সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ সাদেক হোসেন ভূঁইয়া, জেলা আ’লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ করিম মজুমদার, উপজেলা তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আফসার, যুব ও ক্রিয়া সম্পাদক অহিদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক শাহ খোরশেদ আলম, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সুমন, পেরিয়া উইপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মজুমদার, নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী কেফায়েত উল্লাহ মিয়াজী, নাঙ্গলকোটে কর্মরত সাংবাদিক বৃন্দ, বিভিন্ন ইউপি চেয়াম্যান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক বিশিষ্ট্য ব্যক্তিবর্গ।
জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। জীবদ্দশায় তিনি আওয়ামী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৭ সালে জীবনের প্রথম নির্বাচনে নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী হন। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে ১৯৭৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের দূর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন। তরুণ বয়সে নৌকার কান্ডারি। জীবনের প্রথম সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পরবর্তীতে এরশাদ মন্ত্রীসভার প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে সারাদেশে আওয়ামী লীগের মাত্র ৩৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ছিলেন অন্যতম একজন। প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি চৌদ্দগ্রামের হোমনাবাদ অঞ্চল এবং লাকসাম উপজেলার অবহেলিত পাঁচটি ইউনিয়নের সমন্বয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা (থানা) গঠনের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন। এরই প্রেক্ষিতে একনেকে নাঙ্গলকোট উপজেলা অনুমোদিত হয়।
জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ১৯৮৬ এবং ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু তিনি সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিশাল ভোটের ব্যবধানে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি নাঙ্গলকোটে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন। কিন্তু ওই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়। প্রয়াত জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন। ব্যাপক জনপ্রিয়তায় তিনি নাঙ্গলকোটের মাটি ও মানুষের খেতাব লাভ করেন।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া নাঙ্গলকোটবাসীকে নিঃশব্দে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিয়ে চলে যান। তাঁর তিনটি জানাজায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করে। নিজ বাড়ি বদরপুরে বাড়ির পার্শ্বে পুকুর ধারে সবুজ বৃক্ষে ঘেরা শ্যামল মাটিতে তাকে অন্তিম শয়ানে শায়িত করা হয়।
জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব নাজমুল হাছান ভূঁইয়া বাছির জানান, জীবদ্দশায় আমার চাচা মানষের কল্যাণে নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন। পরোপকার ছাড়া তিনি কিছুই বুঝতেন না। তিনি ছিলেন সততার রাজনীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় সকলের দোয়া কামনা করছি।

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ