কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলনে পুরুষ ভোটার ১৩৫ জন, অথচ ভোট পড়েছে ১৫৩ টি। বাকি ১৮ ভোট কোথায় থেকে এলো প্রশ্ন তুলে ভোট বাতিল করে পুনরায় সম্মেলনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে কাউন্সিলে বিভিন্ন পদের ৭প্রার্থী। গত শনিবার নাঙ্গলকোট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড সম্মেলনে এ জাল ভোটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার বিকালে ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রার্থী বেলাল হোসেন, সিনিয়র সহ সভাপতি পদপ্রার্থী মকবুল আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আবুল বাশার সোহাগ, আবু তৈয়ব মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক পদপ্রার্থী রবিউল হোসেন পিন্টু, আনোয়ার হোসেন ও আব্দুল মমিন। এছাড়াও দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে অপর সভাপতি পদপ্রার্থী ধাতিশ্বর গ্রামের ওমর ফারুক, বাতুপাড়া গ্রামের মাঈন উদ্দিন মিন্টু, একই গ্রামের হাছান, মাস্টার শিব্বির, এমরান ও ইউনুসের নেতৃত্বে প্রায় ২’শত বহিরাগত সন্ত্রাসী প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। হামলায় ২পৌর যুগ্ম আহ্বায়ক সহ ১২জনকে আহত করে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী প্রার্থীগণ।। আহতরা হলেন নাঙ্গলকোট পৌরসভা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মাস্টার আবু আহম্মেদ, আব্দুস সাত্তার, বিএনপি কর্মী বাতুপাড়া গ্রামের দুলাল, মাসুমা বেগম, রোকেয়া বেগম, আবুল কালাম, হাফেজ ইউসুফ, মোহাম্মদ ইয়াছিন, গিয়াস উদ্দিনসহ ১২জন। আহতদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কাউন্সিলে বিভিন্ন পদে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা বলেন, আমাদেরকে পৌরসভা বিএনপি আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মুকুল ও সদস্য সচিব আব্দুল কাদের জিলানীসহ অপর যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্যদের স্বাক্ষরিত একটি রেজুলেশন কপি দিয়ে সম্মেলনের স্থান, তারিখ ও ভোটার সংখ্যা উল্লেখ করে প্রস্তুতি নিয়ে সম্মেলনে যেতে আহ্বান করা হয় । আমরা সম্মেলন স্থলে গিয়ে দেখি ভোটারদের বাহিরেও ৩-৪’শত লোক বসে আছে। প্রশ্ন করলে নেতৃবৃন্দ বলে ভোট শুরু হলে সবাইকে বের করে দেয়া হবে। পরে তাদেরকে বের করে দিয়ে ভোট গ্রহণ শুরু করলে বহিরাগতরা পুনরায় সম্মেলন স্থলে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১২ জনকে আহত করে ও জাল ভোট দিয়ে তাদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেন। পৌরসভা নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত রেজুলেশনে উল্লেখ করা হয় কাউন্সিলে পুরুষ ভোটার ১৩৫ ও নারী ভোটার ২৫জন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সম্মেলনে মহিলা ভোট গ্রহণ করেনি নেতৃবৃন্দ। পুরুষ ভোট ১৩৫ হলেও রেজাল্ট সিটে দেখানো হয় ভোট পড়েছে ১৫৩ টি। ১৮টি জাল ভোট পড়া ও হামলা চালিয়ে ১২জনকে আহত করায় আমরা জেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের নিকট তদন্ত পূর্বক কমিটি বাতিল করে পুনরায় সম্মেলনের আহ্বান ও হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানাই।
অভিযুক্ত সভাপতি পদের অপর প্রার্থী ওমর ফারুক বলেন, কোন মারামারি হয়নি, আমি ভোটে বিজয়ী হয়েছি। রেজুলেশনে কতজন ভোটার উল্লেখ করা হয়েছে তা আমি জানিনা।
পৌরসভা বিএনপি সদস্য সচিব আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৯নং ওয়ার্ডে পুরুষ ভোটার ১৩৫ জন, কিন্তু ১৫৩ জন কিভাবে ভোট দিলো, ১৮ভোট কোথায় থেকে আসলো বিষয়টি সম্মেলন সংশ্লিষ্ট পৌরসভা ও জেলা নেতৃবৃন্দ বলতে পারবে। সম্মেলন চলাকালে হল রুমের বাহিরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে জেনেছি, সম্মেলন কক্ষে থাকায় আমি দেখিনি।
নাঙ্গলকোট পৌরসভা বিএনপি আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মুকুল বলেন, ভোটারদেরকে হাত উঠিয়ে ভোট নেয়া হয়েছে কোন কারচুপি হয়নি। রেজুলেশন উল্লেখিত ভোটের সংখ্যা কোন পক্ষ ফলো করেনি। ওই দিনের সম্মেলনে মারামারি হয়নি, বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়েছে। বিষয়টি ৯নং ওয়ার্ড সম্মেলনের পূর্বেই উভয় পক্ষের মাঝে মিমাংসা করে দেয়া হয়।