সাতবাড়িয়ায় খননের নামে মাটি লুটের অভিযোগ, শঙ্কায় নদী পাড়ের শতশত বাড়ি

প্রকাশিত: ২:০৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫

সাতবাড়িয়ায় খননের নামে মাটি লুটের অভিযোগ, শঙ্কায় নদী পাড়ের শতশত বাড়ি
মাঈন উদ্দিন দুলাল – নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া গ্রামের উত্তর পাড়ায় ডাকাতিয়া নদীতে এম এস আবুল কালাম আজাদ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে বিশাল আকার ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি উত্তোলনের প্রতিবাদে শনিবার নদির পাড়ে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় শত-শত নারী-পুরুষ। এসময় হট্টগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফোরকান। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এম এস আবুল কালাম আজাদ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকার নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সহসভাপতি এম রুবেল।  ছাত্রলীগ নেতা এম রুবেলের সাথে সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়ুব বাঙ্গালী, বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুম মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ কবির মজুমদার টুটুলের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের বিএনপি-আ’লীগের একটি সিন্ডিকেট এ মাটি বিক্রির সাথে জড়িত বলে দাবি নদীপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের। ইতিপূর্বে নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে মাটি তুলে স্থানীয়দের কাছে প্রায় ৭৬ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করেছে বলে দাবি করেন সাতবাড়িয়া গ্রামের আবুল কালাম-সহ বিক্ষোভকারীরা।

নদী পাড়ের বাড়ি ও জমির মালিকগণ বলেন, স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কিছু নেতা সিন্ডিকেট গড়ে এই মাটি খনন করছে এবং তা বিক্রি করছে। এরআগেও উপজেলা যুবলীগ সহ-সভাপতি সেলিমের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন হয়েছিল। এবার বিএনপি নামধারী নেতাকর্মীরা একই কাজ করছে। অথচ এতে শতশত পরিবার ভোগান্তিতে পড়ছে। নদী থেকে উঠানো মাটি স্থানীয় ১০-১২ জনের কাছে প্রায় ৭৬ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে৷ আমাদের ঘরবাড়ি হুমকিতে ফেলে তারা ব্যবসা করছে, আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

সাতবাড়িয়া এলাকার আবুল কালাম ও রুবেল বলেন, কিছু নামধারী বিএনপির নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগের সাথে মিলে মাটি বিক্রি করছে। তারা বিএনপির বদনাম করছে। দেশের ও পাবলিকের ক্ষতি করছে এই সিন্ডিকেট। গরিব ও মেহনতি মানুষদেরকে বাঁচান। এখন পর্যন্ত ৭৬ লাখ টাকার মাটি বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের নিরবতা আমাদের সন্দেহ হচ্ছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এস আবুল কালাম আজাদ এর স্বত্বাধিকারী এম রুবেল বলেন আমরা মাটি বিক্রি করিনি, ৭ জনের জমিতে স্তুপ করে রেখেছি। পরে তারা সরকারি নিয়মে মাটি ক্রয় করতে পারলে তাদের জমিতে থাকবে। নদী খননের কাজ করতে গিয়ে আমরা এক পক্ষকে ম্যানেজ করেছি, এখন অন্য পক্ষ সমস্যা সৃষ্টি করছে।

নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ ফোরকান বলেন, উভয় পক্ষের কথা শুনে বিশৃঙ্খলা এড়াতে স্থানীয় ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পক্ষকে বলেছি নদী খননে দেয়া ওয়ার্ক অর্ডার দেখে পরবর্তী কাজ সম্পন্ন করতে।

এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেন, এখানে নদী খনন কার্যক্রম চলছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডে যোগাযোগ করতে পারেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, আমি নতুন এসেছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখব।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ