বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অস্ত্র, যৌন ও জুয়া খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার

প্রকাশিত: ২:০২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২৪

বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অস্ত্র, যৌন ও জুয়া খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার

মাঈন উদ্দিন দুলাল- নাঙ্গলকোটের বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের কক্ষ ও তার বিশ্রামাগার-সহ ৩টি কক্ষ থেকে স্থানীয়দের তোপের মুখে বুধবার দুপুরে ওই ইউনিয়নের সদস্যরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র, অবৈধ ভাবে রেখে দেয়া দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি কম্বল, লুঙ্গি, শাড়ী এবং যৌন ও জুয়া খেলার সামগ্রী উদ্ধার করে। পরে ওই মালামাল গুলো নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জমা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ বটতলী বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে।
জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সরকার পতনের পর সারাদেশের ন্যায় উপজেলার বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল জলিল গাঁ ঢাকা দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের আন্দোলন ধমনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল অস্ত্র মওজুদ রাখা আছে বলে দাবী করে আসছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন একত্রিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় ওই ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ স্বপন পরিষদে আসলে স্থানীয়রা তাকে দিয়ে ওই পরিষদের বর্তমান সদস্য আব্দুল হামিদ ও জাকির হোসেন ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে তালা খুলে সচিব উত্তম চন্দ্র বর্মণের কক্ষ থেকে গত ঈদুল ফিতরে হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য সাবেক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের দেয়া শতাধিক শাড়ী-লুঙ্গি, চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের কক্ষ থেকে কয়েকটি ধারালো অস্ত্র ও তার বিশ্রাম কক্ষ থেকে যৌন ও জুয়া খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকীর নিকট জমা দেন।
গ্রাম পুলিশ মোহাম্মদ স্বপন বলেন, আমি বাজারে আসলে সবাই আমাকে পরিষদের তালা খুলে দিতে বাধ্য করে। পরে সবাই মিলে এগুলো উদ্ধার করে।
বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল হামিদ ও জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, স্থানীয়দের হাত থেকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় রক্ষা করতে গ্রাম পুলিশ স্বপনের মাধ্যমে তালা খুলে আমাদের সামনে দেশীয় ধারালো অস্ত্র, সরকারি কম্বল, লুঙ্গি, শাড়ী এবং যৌন ও জুয়া খেলার সামগ্রী উদ্ধার করে। পরে আমরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে পরামর্শক্রমে উনার কার্যালয়ে জমা দিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সমাজপতি আতাউর রহমান খাঁন ও অধ্যাপক আফজালুর রহমান বলেন, আমাদেরকে বিক্ষোভকারীরা বাজার থেকে নিয়ে এসে এগুলো দেখায়। সর্বসাধারণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এমন অস্ত্রশস্ত্র, যৌন ও জুয়া খেলার সামগ্রী পাওয়া এটা একে বারেই কাম্য ছিল না। তাছাড়া হতদরিদ্রদের না দিয়ে সরকারি কম্বল, শাড়ী-লুঙ্গি জমা রেখে দেওয়া বেআইনি।
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব উত্তম চন্দ্র বর্মণ মোবাইল ফোনে বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা, চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করুন।
এ ব্যাপারে বটতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের একাধিক নাম্বারে ফোন দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, দু’জন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এসে আমার কাছে কিছু মালামাল ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র জমা দিয়ে গেছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিব।

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ