নাঙ্গলকোটে নারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, পরিবারের দাবী হত্যা

প্রকাশিত: ৩:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০২১

নাঙ্গলকোটে নারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, পরিবারের দাবী হত্যা

মাঈন উদ্দিন দুলাল- নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের চিওড়া গ্রামে শানু আক্তার মুন্নি (৪৫) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ। মুন্নি ওই গ্রামের মাওলানা আলী আজ্জমের ছেলে মঈন উদ্দিন বাবুলের স্ত্রী ও জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও গ্রামের মৃত জিল্লুর রহমানের কন্যা।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত ২৫ বছর পূর্বে ঢাকায় দর্জির কাজ করতেন মাঈন উদ্দিন বাবুল। বাবুলের দোকানে দর্জির কাজ শিখতে গিয়ে তার সাথে শানু আক্তার মুন্নির প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। পরে তারা বসেন বিয়ের পিঁড়িতে। বিয়ের পর তাদের কোল জুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান, সুখেই কাটছিল তাদের দিন। কিন্তু হঠাৎ বিয়ের দু’ বছর পর বাবুল আবার প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন নাঙ্গলকোট উপজেলার মক্রবপুর ইউনিয়নের কনকৈইজ গ্রামের মৃত মাস্টার আবুল কাশেম তালুকদারের মেয়ে রেহানা আক্তার পান্নাকে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রী’র সাথে বিরোধ শুরু হয় বাবুলের। প্রথম স্ত্রী শানুর কোন আত্মীয় স্বজন তার খোঁজ খবর না রাখার সুযোগে তার উপর সবসময় দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার আত্মীয় স্বজনরা শারীরিক নির্যান করতো বলে জানান স্থানীয়রা। গত এক সাপ্তাহ পূর্বে দ্বিতীয় স্ত্রী পান্না, তার ৪ মেয়ে ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পন্নারা গ্রাম থেকে দ্বিতীয় স্ত্রীর কয়েকজন মামা এসে শানুকে মারপিট করে বলে জানান স্বামী বাবুল। এ ব্যাপারে শুক্রবার স্থানীয় ভাবে শালিস বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সোমবার সকাল ৯টার দিকে বাবুল স্থানীয়দের জানায় তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। পরে স্থানীয়দের ফোন পেয়ে বসত ঘরের সিলিং থেকে শানু আক্তার মুন্নির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতের খালা আয়েশা খাতুন, খালাত বোন কামরুন্নাহার ও ভগ্নিপতি মাসুদ বলেন, শানু ছিলো অত্যান্ত সহজ সরল, সে কখনো কার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়াতো না । তরপরও বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে শারীরিক নির্যাতন করায় সে ঢাকায় ভাইয়ের বাসায় গিয়ে থাকতো। কিন্তু গত ১০ দিন পূর্বে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ভাবে ফোন করে বাড়ীতে নিয়ে এসে আজকে সকালে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে বাবুল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বজনরা।
নিহতের একমাত্র কন্যা রাবেয়া বসরি বলেন, আমার মায়ের উপর সবসময় নির্যানত করত আমার ছোট মা ও তাদের লোকজন। এখন আমার মাকে হত্যা করে আমাকেও বাবার সব সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করছে তারা।
অভিযুক্ত মাঈন উদ্দিন বাবুল বলেন, আমি সকালে ঘুম থেকে উঠে আমার স্ত্রী শানু আক্তার মুন্নিকে নাস্তা তৈরী করতে বলি, সে তখন ময়দার প্যাকেট ছুড়ে ফেলে দেয়। আমি তাকে কিছু না বলে নাস্তা করতে দোকানে চলে যাই। বাজার থেকে নাস্তা করে বাড়ী এসে তার লাশ ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই।
নাঙ্গলকোট থানা উপ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন খন্দকার বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

 

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ