কেফায়েত উল্লাহ মিয়াজী:
আজ ১১ডিসেম্বর স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনাভূমি খ্যাত কুমিল্লার নাঙ্গলকোট হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে এ অঞ্চলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনসাধারণের তুমুল প্রতিরোধের মুখে নাঙ্গলকোট এলাকা থেকে পাক হানাদার বাহিনী বিতাড়িত হয়।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জুলাই মাসের প্রথম দিকে পাক হানাদার বাহিনী উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের পরিকোট ব্রীজ সংলগ্ন ভূঁইয়া পুকুর পাড় এলাকাকে মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করে। স্থানীয় রাজাকার, আলবদরের সহযোগিতায় অনেক মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ কয়েক‘শ লোকজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করে পাশ্ববর্তী ডাকাতিয়া নদীতে লাশ ভাসিয়ে দিতেন। অনেক নারী পাক হানাদার বাহিনীর হাতে ওই স্থানে যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
এছাড়াও নাঙ্গলকোট উপজেলাসদরসহ মৌকারা বড় দীঘির পাড়, ঢালুয়া ইউনিয়নের হাসানপুর রেলস্টেশন এবং তেজেরবাজার এলাকায়ও পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ মানুষের উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়।
২০০৬ সালে তৎকালীন আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া পাকহানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাকান্ডের নিরব স্বাক্ষী ডাকাতিয়া নদী সংলগ্ন বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের পরিকোট নামক স্থানে বধ্যভূমির নামফলক উন্মোচন করেন। এরপর ২০১৯-২০অর্থ বছরের বরাদ্দ থেকে বধ্যভূমিটিতে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করা হয়। পরর্বতীতে বাউন্ডারি দেয়ালের ভিতরের জমিটি নিজেদের দাবি করে স্থানীয়রা দখল করে নেয়। চলতি বছরে উপজেলা প্রশাসন ঐ স্থানটি দখল মুক্ত করলেও সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিকোট বধ্যভূমি সংরক্ষেণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে হেসাখাল ইউনিয়নের দু‘জন এবং বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে।
Please follow and like us: