নাঙ্গলকোটে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

প্রকাশিত: ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪

নাঙ্গলকোটে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

কেফায়েত উল্লাহ মিয়াজী :
বৈষম্য দূরীকরণে মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, জাতীয় করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা বেসরকারি স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষা পরিবারের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকীর নিকট এ স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, চাঁন্দগড়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক লিটন, ইসলামপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শহীদুল্লাহ মজুমদার স্বপন, মাধবপুর এস.ডি.এস দাখিল মাদরাসা সুপার মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, ঢালুয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন মজুমদার, উত্তর শাকতলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম, বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল বৈষম্য দূরীকরণ কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ইমাম হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন, নাঙ্গলকোট আফসারুল উলূম কামিল মাদরাসা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা নূরুল আমিন, মৌকারা নেছারিয়া কামিল মাদরাসা অধ্যক্ষ মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ময়ূরা উচ্চ বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক মাহবুবুল হক-সহ উপজেলার বিভিন্ন এমপিও ভূক্ত মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসার পক্ষ থেকে শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ৯৭% বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা জাতীয়করণ করা অত্যন্ত জরুরি। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা, একই পাঠ্য-পুস্তুক ও একই বোর্ডের আওতায় পরীক্ষা হলেও, সরকারি ও বেসরকারির মধ্যে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার বৈষম্য শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। তাই, শিক্ষার সকল স্টেকহোল্ডারদের প্রাণের দাবি হলো মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ। এটি নিশ্চিত করা হলে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাবে এবং শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে, যা আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরত্বপর্ণ। শিক্ষা বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একাডেমিক ও প্রশাসনিক। শিক্ষকেরা একাডেমিক কাজে দক্ষ, পেডাগোজি কেন্দ্রিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। অন্যদিকে, ৩১ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ রয়েছে। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্রের, তাদের কাজের ধরন ও চর্চা ভিন্ন। যদি শিক্ষকরা প্রশাসনে অনভিজ্ঞ হন, তবে তা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। তাই, উভয় পেশার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও পরস্পর পরিপূরক হিসেবে কাজ করা উচিত, যাতে দেশের শিক্ষা উন্নত হতে পারে। উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ বছরের শিক্ষা প্রশাসনের কাজের দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেড অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোর দাবি জানান তারা।
এছাড়াও বক্তারা বলেন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত। স্কুল, মাদ্রাসা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। কমিশন শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরি করবে, যা তাদের মর্যাদা ও প্রেরণা বৃদ্ধি করবে। এছাড়া, উপজেলা থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসন কিভাবে চলবে, তা স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা গুলোর কার্যক্রম কিভাবে সমন্বয় হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করবে।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকি বলেন, স্কুল ও মাদরাসা শিক্ষকগণ তাদের বিভিন্ন দাবি সম্বলিত শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবরে একটি স্মারকলিপি আমার নিকট হস্তান্তর করেছে এবং মৌখিক ভাবে আমাকে অবহিত করেছে। আমি তাদের স্মারকলিপিটি মন্ত্রনালয়ে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ