নাঙ্গলকোটে ব্যবসায়ী-সহ ৫জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২৪

নাঙ্গলকোটে ব্যবসায়ী-সহ ৫জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ইমরান হোসেন সোহান, নাঙ্গলকোট : নাঙ্গলকোটের বাঙ্গড্ডা গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ, অটোরিকশা চালক হিরণ মোল্লা, চা দোকানদার সফিক, কৃষক শাহিন ও রিপনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক ট্রাক চালক অপহরণের ঘটনায় ষড়যন্ত্র মূলক আসামি করার প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে বাঙ্গড্ডা বাজারে মানববন্ধন করে এলাকাবাসি। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সামাজ সেবক বাহার উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, খোকন মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক মাঝি ও ভূক্তভোগী হারুনুর রশিদ, অটোরিকশা চালক হিরণ মোল্লা, চা দোকানদার সফিক, কৃষক শাহিন ও রিপন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাঙ্গড্ডা গ্রামের হিরণ মোল্লা, সফিক ও শাহিন গান্দাছি গ্রামের মৃত নূর হোসেনের ছেলে সাজুর সাথে বাঙ্গড্ডা গ্রামের হিরণ মোল্লা, সফিক ও শাহিনের দীর্ঘদিন যাবৎ অর্থনৈতিক লেনদেন রয়েছে। টাকা না দেয়ার পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাজু গত ৩০ এপ্রিল আত্মগোপনে চলে যায়। পহেলা মে পাওনাদার হিরণ মোল্লা, সফিক ও শাহিনকে আসামি করে নাঙ্গলকোট থানায় সাজু অপহরণ হয়েছে বলে অভিযোগ করে সাজুর স্ত্রী রনি বেগম। পরে একই ঘটনায় ১৩ মে রিনা বেগম কুমিল্লার আদালতে গিয়ে একটি মামলা দায়ের করে। থানার অভিযোগে পাওনাদার হিরণ, সফিক ও শাহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেলেও আদালতে করা মামলায় সৌদি আরব প্রবাসী বাঙ্গড্ডা গ্রামের হারুনুর রশিদ ও কৃষক রিপনকেও আসামী করা হয়। এ ঘটনাটি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের পরিকল্পনায় তাদেরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে আসামি করা হয় বলেও দাবি করেন বক্তারা।
এ ব্যাপারে সৌদি আরব প্রবাসী ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ বলেন, আমাদের গ্রামের লোকজন গান্দাছি গ্রামের সাজুর নিকট প্রায় ৩৪লাখ টাকা পায়। সাজু তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ৩টি ড্রাম ট্রাক ক্রয় করে, পরে সে ২টি ট্রাক বিক্রি করে ফেলায় পাওনাদাররা টাকার জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করে ও তার অপর ড্রাম ট্রাকটি আটক করে রাখে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাজু বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের পরামর্শে অপহরণ নাটক সাজিয়ে ৩ পাওনাদারের বিরুদ্ধে নাঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ করে। সাইফুল চেয়ারম্যানের সাথে আমার অর্থনৈতিক লেনদেন থাকায় এ ঘটনায় পুনঃরায় আদালতে মামলা হওয়ার সময় সে আমাকেও আসামি করে হয়রানির চেষ্টা করছে। চেয়ারম্যান সাইফুল পূর্বেও ৩টি মামলায় আমাকে জড়িয়ে হয়রানি করে আসছে। আমি তার নিকট ৫৯লাখ টাকা পাওনা আছি। পাওনা টাকা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আমি এ মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সাজুর স্ত্রীকে একটি অপরিচিত মোবাইল নাম্বার থেকে ২০লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, মুক্তিপন দাবি করে মোবাইল নাম্বারে কথা বলা ব্যক্তিকে চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।
সাজুর স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, আমার স্বামীর সাথে বাঙ্গড্ডা বাজারে হিরণ মোল্লা, শফিক, শাহিনের সাথে টাকা নিয়ে কিছুদিন যাবৎ ঝামেলা চলছে। গত ৩০এপ্রিল রাতে পাওনাদাররা আমার স্বামীকে বাঙ্গড্ডা বাজারে মারপিট করে, এরপর থেকে তাকে আর খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি এঘটনায় পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগীতা না পাওয়ায় পরে আদালতে মামলা করি।
বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, সাজুর সাথে তাদের লেনদেন আছে এ ব্যাপারে আমাকে জানানোর পর আমি উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সাজুকে টাকার ব্যবস্থা করতে বলি। সাজু দেড় লাখ টাকা ব্যবস্থা করে আমার কাছে আসলে আমি পাওনাদারদের এ টাকা নিয়ে কোরবানির ঈদ পর্যন্ত তাকে সময় দিতে বলি, কিন্তু পাওনাদাররা রাজি না হওয়ায় বিষয়টি অসমাপ্ত থেকে যায়। পরবর্তিতে পরিবারের পক্ষ থেকে সাজু অপহরণ হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছে।

Please follow and like us:

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ