কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় সাখাওয়াত হোসেন মজুমদার সাকিব নামে এক যুবককে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আজমপুর রেল স্টেশন থেকে বৃহস্পতিবার হত্যায় অভিযুক্ত মফিজুল ইসলাম (৫৩) নামে একজনকে আটক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। ঘাতক মফিজুল ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার এলাকার কলাউড়া গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন মজুমদারের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন মজুমদার সাকিবকে গত পহেলা সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে খোঁজে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তার স্বজনরা। ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে সাতবাড়িয়া স্কুলের পিছনে নাপিত বাড়ি সংলগ্ন একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে পচা দুর্গন্ধ পেয়ে ওই সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা সরিয়ে সাকিবের লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে নিহত সাখাওয়াত হোসেন সাকিবের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক উজ্জ্বল চন্দ্র বিশ্বাসের অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আজমপুর রেল স্টেশন থেকে ঘাতক মফিজুল ইসলামকে আটক করা হয়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মফিজুলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞেসাবাদ করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে বলেন, কাজের সুবাদে মফিজুল সাতবাড়িয়া গ্রামে থাকতেন। এসময় একই গ্রামের সুফিয়া বেগমের সাথে তার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি সাকিব দেখে ফেলায় জানাজানি হয়ে যাবে এবং সুফিয়া বেগমের সংসার ভেঙ্গে যাবে এমন আশংকায় মফিজুল ও সুফিয়া বেগম সাকিবকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে শুক্রবার রাতে ঘাতক মফিজুল সাকিবকে তার রুমে ডেকে নিয়ে লেবুর শরবতের মধ্যে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়, সাকিব গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে গেলে মধ্যরাতে মফিজুল ইসলাম ও সুফিয়া বেগম মিলে বাড়ির বাহিরে নিয়ে মফিজুল নিজের গামছা দিয়ে সাকিবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে মফিজুল ও সুফিয়া বেগম সেপটিক ট্যাংকে সাকিবের মরদেহ ফেলে দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই উজ্জ্বল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, হত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেফতারের অভিযান চালিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আজমপুর রেল স্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এবং হত্যায় অপর অভিযুক্ত সুফিয়ার সম্পৃক্ততা পুলিশ তদন্ত করছে।