নাঙ্গলকোটে ধর্ষণ মামলা দিয়ে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৩

নাঙ্গলকোটে ধর্ষণ মামলা দিয়ে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ

কেফায়েত উল্লাহ মিয়াজী :
নাঙ্গলকোটের ছুপুয়া গ্রামের উত্তর পাড়ার শেখ ফরিদ (৩০) নামে এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মূলক ধর্ষণ মামলা দিয়ে তাকে ও তার পরিবারের লোকদের হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে একই বাড়ির মৃত আলী নোয়াবের মেয়ে হনুফা বেগমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা উদঘাটন ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের ছুপুয়া উত্তর পাড়ার নুর আহম্মদ আমিন বাড়ির নুরুল ইসলামের ছেলে শেখ ফরিদ দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ বাহারাইনে কর্মরত। শেখ ফরিদ ২পুত্র সন্তানের জনক। গত একমাস পূর্বে শেখ ফরিদ ছুটিতে দেশে আসেন। গত ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে একই বাড়ির রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হনুফা বেগম তার কিশোরী মেয়ে লামিয়াকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ এনে নাঙ্গলকোট থানায় শেখ ফরিদের নামে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলা করার ৩দিন পূর্বে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হলেও এব্যাপারে কিছুই জানতেননা বাড়ির লোকজন অথবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
প্রবাসী শেখ ফরিদের পিতা নুরুল ইসলাম ও তার মা ছালেহা বেগম বলেন, আমাদের ছেলের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে ওই মামলায় বলা হয়েছে আমাদের খড়ের গাধার পাশে ওই মেয়েকে রাত ৮টার দিকে হাত পা বেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে, অথচ খড়ের গাধা আর আমাদের ঘর মাত্র ৫ফুটের দূরত্ব। এ ঘরে আমরা ছাড়াও আমাদের ২পুত্র বধূ ও নাতি নাতনিরা বসবাস করে। যে দিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেই দিন আমরা সবাই ঘরে ছিলাম অথচ কেউ কিছু জানলাম না, বিষয়টি জানলাম এর ৩ দিন পর যখন থানায় মামলা হলো তখন। প্রকৃত পক্ষে হনুফা বেগমের ৫ মেয়ের সবাই পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত। এছাড়াও তারা বিদেশে কাজের ভিসার কথা বলে বাংলাদেশ থেকে কম বয়সী মেয়েদের নিয়ে দেহ ব্যবসা করে। যে মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ওই মেয়ে রাতে বিভিন্ন জনের সাথে গিয়ে দেহ ব্যবসার কারণে গত কয়েকদিন পূর্বেও পায়ে শিকল দিয়ে পরিবারের লোকজন তাকে বেঁধে রাখে। এ মেয়েকে কুমিল্লায় এক ব্যবসায়ীর বাসায় কাজ করতে দিলে সেখানেও সে অপকর্ম করায় বাসা থেকে বের করে দেয়। আমাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের জন্য তারা স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারীর ষড়যন্ত্রে আমার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছে। আমরা এ মামলা থেকে পরিত্রাণ চাই।
শেখ ফরিদের স্ত্রী ফারজানা বেগম বলেন, মামলায় ঘটনাস্থল যেখানে দেখানো হয়েছে ওই স্থান আর আমার বেডরুম ৫ ফুটের ব্যবধান। তাছাড়া মামলায় ঘটনার সময় দেখানো হয়েছে রাত ৮টায়, এ সময় আমরা কেউ ঘুমানোর কথা নয় অথচ তারা বলেছে হাত পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। যদি এমন কোন ঘটনা আমাদের টিনসেড ঘর থেকে ৫ ফুট দূরে খড়ের গাধার পাশে হয়ে থাকে তাহলে আমাদের ছেয়ে বেশি জানার কথা কেউ নয়, কিন্তু আমরা বিষয়টি জেনেছি মামলা হওয়ার পর। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানাই।
মামলার বাদী হনুফা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে তাই মামলা করেছি। মেয়েদের দেহ ব্যবসা ও পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মেয়ে কথা না শুনলে মাদরসায় না গেলে শাসন করবো না? কুমিল্লায় ওই মেয়ের অপকর্মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কুমিল্লায় আামার এক আত্মীয়ের বাসায় দিয়েছে, আবার নিয়ে এসেছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমি বাদী ও বিবাদীর কাছে জেনেছি মামলা হওয়ার পর। অথচ মামলায় ঘটনার সময় দেখানো হয়েছে এর ৩ দিন পূর্বে। আমি বিষয়টি আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে সঠিক তদন্তের দাবী জানাই, যেন কোন নিরপরাধ মানুষ ফেঁসে না যায়।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, মামলা হওয়ার পর মেডিকেল পরিক্ষা-সহ প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে, তদন্ত চলমান আছে।

Please follow and like us:

ফেইসবুকে আমরা

সর্বশেষ সংবাদ